Increase Reset Decrease

কার্তিক

একদা কৈলাসে জননী দুর্গার কাছে গণেশ এবং কার্ত্তিক বসে আছেন। দেবীর গলায় বহুমূল্য মণিময় রত্নমালা। দেবী বললেন : “তোমাদের মধ্যে যে বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড প্রদক্ষিণ করে আগে আমার কাছে আসতে পারবে, তাকে আমি আমার গলার এই রত্নমালা উপহার দেব।” ময়ূরবাহন কার্ত্তিক ভাবলেন, দাদা গণেশের তো ঐ স্ফীতোদর আকার, তার বাহন ঐ ক্ষুদ্রাকায় ইঁদুর! সুতরাং মায়ের রত্নমালা উপহার যে আমারই প্রাপ্য হবে তাতে আর সন্দেহ কী? অগ্রজের দুর্দশা কল্পনা করে বিদ্রূপের হাসিও খেলে গেল অনুজের ওষ্ঠাধার-প্রান্তে। তৎক্ষণাৎ কার্ত্তিক ময়ূরে চড়ে বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড প্রদক্ষিণে বেড়িয়ে গেলেন। এদিকে কার্ত্তিক বের হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর গণেশ আসন ছেড়ে উঠলেন। তিনি তাঁর প্রজ্ঞাচক্ষুতে দেখলেন মায়ের শরীরের মধ্যেই বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড। সেজন্য ধীরে ধীরে তিনি মাকেই প্রদক্ষিণ করে প্রণাম করলেন। মা-ও প্রসন্ন হয়ে গণেশের গলায় রত্নমালা পরিয়ে দিলেন। অনেকক্ষণ পর বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড চষে ফেলে নিশ্চিত-সাফল্যে কার্ত্তিক হাসতে হাসতে সগর্বে কৈলাসে ফিরে এলেন। দেখলেন, দাদা গলায় মায়ের রত্নমালা পরে শান্তভাবে বসে আছেন।

উপাখ্যানটিতে আপাতদৃষ্টিতে দুটি বিষয় স্পষ্ট : এক, গণেশ স্থিতধী ও শান্ত এবং কার্ত্তিক ক্ষিপ্রকর্মা ও তেজস্বী; দুই, গণেশ ইঁদুরবাহন ও কার্ত্তিক ময়ূরবাহন।


Print