
অর্ধনারীশ্বর মূর্তির উৎপত্তি
শিবের এই অর্ধনারীশ্বর রূপ বা মূর্তিটির উদ্ভব ঠিক কখন হয়েছে, বলা কঠিন। বৈদিক ঋষিগণ মূর্তিপূজক ছিলেন না, কিন্তু প্রাক্-বৈদিক যুগে অথবা বৈদিক যুগের সমকালীন সিন্ধু সভ্যতার যুগে মূর্তিপূজার বহুল প্রচলন ছিল। তবে সিন্ধু সভ্যতার যুগের যেসব দেবমূর্তির নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে সেগুলি শিবমূর্তি বা শক্তিমূর্তি বলে স্থিরীকৃত হলেও উভয়ের সংমিশ্র যুগলমূর্তি অথবা ‘অর্ধনারীশ’ বা ‘অর্ধনারীশ্বর’ মূর্তির নিদর্শন মেলেনি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাদি থেকে দেখা যায় যে, গুপ্তযুগে (তৃতীয়-পঞ্চম শতাব্দী) এবং কুষাণ যুগে (প্রথম-তৃতীয় শতাব্দী) মূর্তিপূজা হিন্দুদের মধ্যে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছিল। গুপ্ত ও কুষাণ যুগের যেসব মূর্তি পাওয়া গিয়েছে সেগুলির মধ্যে শিবের অর্ধনারীশ্বর মূর্তি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। মূর্তির ডানদিকে সায়ুধ অর্ধমহাদেব, বামদিকে অর্ধপার্বতী। গুপ্ত ও কুষাণ যুগের এই অর্ধনারীশ্বর মূর্তিগুলিই এ পর্যন্ত প্রাপ্ত অর্ধনারীশ্বর মূর্তির প্রাচীনতম নিদর্শন। দক্ষিণ ভারতের তাঞ্জোর এবং দরশুরামের প্রাচীন মন্দিরগাত্রে উৎকীর্ণ অর্ধনারীশ্বর মূর্তিগুলি চোল যুগের (নবম-দশম শতাব্দীর) বলে পণ্ডিতরা মনে করেন।