Increase Reset Decrease

মহাবিদ্যা - কালী

“একি ভয়ঙ্করী, করালবদনা, লোলজিহ্বা, রুধিরমগনা। গলিত রুধির মুণ্ডমালা গলে বিলম্বিত। মহামুণ্ড করে। রক্তস্রোত ঝরে। খড়্গ ধরে ভাসে রক্তধারে। বরাভয় দ্বিভুজ দক্ষিণে। বিবসনা বিকটদশনা, ত্রিনয়না, চন্দ্রখণ্ড শোভে ভালে!” ইনি প্রথম মহাবিদ্যা কালী। দেবী নিজে একবার তাঁর এই কালীমূর্তির প্রাধান্যের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, “সর্বাসাং সিদ্ধবিদ্যানাম্ প্রকৃতির্দক্ষিণ।” ইনিই সমস্ত সিদ্ধবিদ্যাদেবীদের প্রধান।

এই দেবী কালীর একটি ছোট ধ্যানমন্ত্র-
“মেঘাঙ্গীং বিগতাম্বরাং শবশিবারূঢ়াং ত্রিনেত্রাং পরম্,
কর্ণালম্বিত শবযুগ্মভয়দাং মুণ্ডস্রজাং মালিনীং।।
বামাধোর্ধ্ব করাম্বুজে নরশিরঃ খড়্গঞ্চ সব্যেতরে।
দানাভীতি বিমুক্তকেশনিচয়াং বন্দে সদা কালিকাম্।।

অন্যান্য মহাবিদ্যাগণ এই কালিকারই নানা রূপভেদ মাত্র। কলৌ কালী কলৌ কালী নান্যদেব কলিযুগে। শ্রীআদ্যা কালিকামন্ত্রাঃ সিদ্ধমন্ত্রাঃ সুসিদ্ধিদাঃ।” কলিযুগে কালী ভিন্ন অন্য কোন দেবদেবী নাই। কালিকামন্ত্রই সর্বসিদ্ধি প্রদান করে। এই কালীর উৎপত্তি নিয়ে আরও নানা কাহিনী নানা পুরাণে আছে। একমতে আনি দারুকাসুরকে বধ করবার জন্য ব্রহ্মার প্রার্থনাতে তাঁর দেহের ষোলো ভাগের এক ভাগ শিবের শরীরে প্রবেশ করান। শিবের কণ্ঠের বিষের নীলবর্ণে তাঁর শরীর নীল হয়ে তিনি শিবের ললাটস্থ ত্রিনেত্র থেকে বাইরে আসেন। তাঁর দেহও নীল হয়। হাতে শিবেরই মতো আয়ুধ, ত্রিনেত্রা-চন্দ্রশেখরা। তিনি দারুকাসুরকে বধ করেন যে রূপে, তাঁর সেই সময় নাম হয় কালী। আবার শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধ করবার সময় দেবী পার্বতীর শরীরকোষ থেকে কৌশিকী দেবীর সৃষ্টি হলে মূল দেবী পার্বতী কৃষ্ণবর্ণা কালী হয়ে যান। এই দেবীমাহাত্ম্য গ্রন্থের ঐ পর্বেই দেখা যায় চণ্ডমুণ্ডকে বধ করবার সময় কৌশিকী দেবীর ললাট ফলক্ থেকে এক ভীমা ভয়ঙ্করী দেবীর আবির্ভাব হয়। দেবীর কোপসমুদ্ভূতা সেই দেবীও কৃষ্ণবর্ণা, বিচিত্র আয়ুধধারিণী রুদ্রাণী মূর্তিতে চণ্ডমুণ্ডকে বধ করেন। সেই আদ্যা কালীই পরে চামুণ্ডা নাম প্রাপ্ত হন।


Print