Increase Reset Decrease

অথ অর্গলস্তোত্রম্‌

অথ অর্গলস্তোত্রম্‌
অস্য শ্রীঅর্গলস্তোত্রমন্ত্রস্য বিষ্ণুর্ঋষিঃ-অনুষ্টুপ ছন্দঃ শ্রীমহালক্ষ্মীর্দেবতা
শ্রীজগদম্বা প্রীত্যর্থং সপ্তশতী পাঠাঙ্গজপে বিনিয়োগঃ।
এই অর্গলাস্তোত্রের ঋষি-বিষ্ণু, ছন্দঃ-অনুষ্টুপ্‌ ও দেবতা মহালক্ষ্মী।
জগদম্বার প্রীতির জন্য চণ্ডীপাঠের অঙ্গরূপে অর্গলাস্তোত্রপাঠের প্রয়োগ হয়।

ওঁ নমশ্চণ্ডিকায়ৈ।

মূল

অনুবাদ

ওঁ মার্কণ্ডেয় উবাচ।
ওঁ জয় ত্বং দেবি চামুণ্ডে জয় ভূতাপহারিণি।
জয় সর্বগতে দেবি কালরাত্রি নমোহস্তু তে।। ১

ঋষি মার্কণ্ডেয় স্বীয় শিষ্যগণকে নিম্নোক্ত অর্গলাস্তব বলিলেন-
হে চামুণ্ডা দেবি, তোমার জয় হউক। হে ভূতাপহারিণি, তোমার জয় হউক। হে সর্বব্যাপিনি দেবি, তোমার জয় হউক। হে কালরাত্রি (প্রলয়ান্ধকাররূপিণি), তোমাকে নমস্কার। ১

জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী।
দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোহস্তু তে।। ২

হে দেবি, তুমি জয়ন্তী (জয়যুক্তা বা সর্বোৎকৃষ্টা), মঙ্গলা (জন্মাদিনাশিনী); কালী (সর্বসংহারিণী), ভদ্রকালী (মঙ্গলদায়িনী), কপালিনী (প্রলয়কালে ব্রহ্মাদির কপাল হস্তে বিচরণকারিণী), দুর্গা (দুঃখপ্রাপ্যা), শিবা (চিৎস্বরূপা), ক্ষমা (করুণাময়ী), ধাত্রী (বিশ্বধারিণী), স্বাহা (দেবপোষিণী) এবং স্বধা (পিতৃতোষিণী)-রূপা তোমাকে নমস্কার। ২

মধুকৈটভবিধ্বংসি বিধাতৃবরদে নমঃ।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৩

হে মধুকৈটভবিনাশিনি, হে ব্রহ্মাবরদায়িনি তোমাকে নমস্কার। আমাকে রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার (কাম-ক্রোধাদি) শত্রু নাশ কর। ৩

মহিষাসুর-নির্ণাশি বিধাত্রি বরদে নমঃ।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৪

হে মহিষাসুরনাশিনি ও ভক্তগণের সুখদায়িনি, তোমাকে নমস্কার। আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু বিনাশ কর। ৪

ধূম্রনেত্রবধে দেবী ধর্ম্মকামার্থ-দায়িনি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৫

হে ধুম্রলোচনবিনাশিনি, হে ধর্ম অর্থ ও কাম-দায়িনী দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ৫

রক্তবীজবধে দেবি চণ্ড-মুণ্ড-বিনাশিনি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৬

হে রক্তবীজবধকারিণি, হে চণ্ড ও মুণ্ড-বিনাশিনি দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ৬

নিশুম্ভশুম্ভনির্ণাশি ত্রৈলোক্যশুভদে* নমঃ।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৭
*পাঠান্তর - জয়দে।

হে শুম্ভমর্দিনি ও নিশুম্ভনাশিনি, ত্রৈলোক্যের শুভদায়িনি দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু বিনাশ কর। ৭

বন্দিতাঙ্ঘ্রিযুগে দেবী সর্ব্বসৌভাগ্যদায়িনি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৮

ব্রহ্মাদি দেবগণ কর্তৃক বন্দিত-পদ-যুগে দেবি, হে সর্ব-সৌভাগ্য-দায়িনি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ৮

অচিন্ত্যরূপচরিতে সর্ব্বশত্রুবিনাশিনি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৯

হে অচিন্ত্য-রূপ-চরিত্রে সর্বশত্রুবিনাশিনি দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ৯

নতেভ্যঃ সর্ব্বদা ভক্ত্যা চাপর্ণে দুরিতাপহে।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১০

হে অপনে, আশ্রিত ভক্তের পাপনাশিনি হে দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১০

স্তুবদ্ভ্যো ভক্তিপূর্ব্বং ত্বাং চণ্ডিকে ব্যাধিনাশিনি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১১

হে চণ্ডিকে, ভক্তিপূর্বক যে তোমার স্তব করে, তুমি তাহার ব্যাধি নাশ কর। হে দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং শত্রু নাশ কর। ১১

চণ্ডিকে সততং* যুদ্ধে জয়ন্তি পাপনাশিনি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১২
*যে ত্বামর্চ্চয়ন্তীহ ভক্তিতঃ।

হে চণ্ডিকে, সতত যুদ্ধে বিজয়িনি ও পাপনাশিনি দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১২

দেহি সৌভাগ্যমারোগ্যং দেহি দেবী পরং সুখং।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১৩

হে দেবি, আমায় সৌভাগ্য ও আরোগ্য দাও এবং পরম সুখ দাও। আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১৩

বিধেহি দেবী কল্যাণং বিধেহি বিপুলাং শ্রিয়ম্‌।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১৪

হে দেবি, আমার কল্যাণ বিধান কর এবং আমাকে বিপুল শ্রী (ঐশ্বর্য) প্রদান কর। হে দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১৪

বিধেহি দ্বিষতাং নাশং বিধেহি বলমুচ্চকৈঃ।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১৫

হে দেবি, আমার শত্রুনাশের বিধান কর ও আমাকে সর্বশ্রেষ্ঠ বল প্রদান কর। হে দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১৫

সুরাসুর-শিরোররত্ন-নিঘৃষ্ট-চরণাম্বুজে।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১৬

হে দেবি, সুরগণ ও অসুরগণের মস্তকস্থিত রত্ন (মুকুটমণি) তোমার পাদপদ্মে লুণ্ঠিত হয়। অতএব হে সুরাসুর-বন্দিতে, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১৬

বিদ্যাবন্তং যশস্বন্তং লক্ষ্মীবন্তঞ্চ মাং কুরু।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১৭

হে দেবি, আমাকে ব্রহ্মবিদ্যাবান্‌, যশস্বী এবং শ্রীমান্‌ কর। হে দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১৭

দেবী প্রচণ্ডদোর্দ্দণ্ড-দৈত্যদর্পনিসূদিনি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১৮

হে প্রবলপরাক্রম-দৈত্যদর্পনাশিনি দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১৮

প্রচণ্ডদৈত্যদর্পঘ্নে চণ্ডিকে প্রণতায় মে।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ১৯

হে প্রচণ্ড-দৈত্যদর্পহারিণি চণ্ডিকে, আমি তোমার চরণে সদা প্রণত। হে দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ১৯

চতুর্ভুজে চতুর্ব্বক্ত্র-সংস্তুতে পরমেশ্বরি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ২০

হে চতুর্ভুজে, চতুর্মুখ ব্রহ্মা কর্তৃক সংস্তুতে হে পরমেশ্বরি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ২০

কৃষ্ণেন সংস্তুতে দেবী শশ্বদ্ভক্ত্যা সদাম্বিকে।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ২১

কৃষ্ণ (বিষ্ণু) কর্তৃক সর্বদা ভক্তিপূর্বক সংস্তুতে হে অম্বিকে, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ২১

হিমাচলসুতানাথ-সংস্তুতে পরমেশ্বরি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ২২

হিমালয়ের কন্যা উমার পতি (মহাদেব) কর্তৃক সংস্তুতে হে পরমেশ্বরি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ২২

ইন্দ্রাণীপতিসদ্ভাব-পূজিতে পরমেশ্বরি।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ২৩

ইন্দ্রপত্নী কর্তৃক পতির (ইন্দ্রের) অবস্থান-জ্ঞানার্থ পূজিতে হে পরমেশ্বরি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ২৩

দেবী ভক্তজনোদ্দাম-দত্তানন্দো-দয়েহম্বিকে।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ২৪

হে দেবি, ভক্তজনের হৃদয়ে অপার-আনন্দোদয়কারিণি হে অম্বিকে, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ২৪

ভার্য্যাং মনোরমাং দেহি মনোবৃত্ত্যনুসারিণীম্‌।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ২৫

হে দেবি, আমার মনোবৃত্তির অনুসারিণী (অনুকূল আচরণকারিণী) মনোরমা ভার্যা (ভরণীয়া বা ভক্তি) দাও। হে দেবি, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ২৫

তারিণি দুর্গসংসার-সাগরস্যাচলোদ্ভবে।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ।। ২৬

দুস্তর-সংসার-সাগরতারিণি হে গিরিসুতে, আমায় রূপ দাও, জয় দাও, যশ দাও এবং আমার শত্রু নাশ কর। ২৬

ইদং স্তোত্রং পঠিত্বা তু মহাস্তোত্রং পঠেন্নরঃ।
সপ্তশতীং সমারাধ্য বরমাপ্নোতি দুর্লভম্‌।। ২৭

ইত্যর্গলস্তোত্রং সমাপ্তম্‌।

এই স্তোত্র পাঠ করিয়া মহাস্তোত্র (সপ্তশতমন্ত্রাত্মিকা চণ্ডী) পাঠ করা উচিত। এইরূপে সপ্তশতীর আরধনা করিলে দুর্লভ বর (ফল) লাভ হয়। ২৭

গুপ্তবতী ও দুর্গাপ্রদীপ টীকাদ্বয় অনুসারে অর্গলাস্তোত্রের অনুবাদ সমাপ্ত।



Print