Increase Reset Decrease

অষ্টমঃ অধ্যায়ঃ

অষ্টমঃ অধ্যায়ঃ
ওঁ নমশ্চণ্ডিকায়ৈ।
রক্তবীজ-বধ

মূল

অনুবাদ

ঋষিরুবাচ।। ১
চণ্ডে চ নিহতে দৈত্যে মুণ্ডে চ বিনিপাতিতে।
বহুলেষু চ সৈন্যেষু ¶wq‡Z®^my‡ik¦it|| ২

মেধা ঋষি বলিলেন-চণ্ড ও মুণ্ড নামক দৈত্যদ্বয় নিহত ও বহু সৈন্য বিনষ্ট হইলে প্রতাপশালী দৈত্যরাজ শুম্ভ ক্রোধাভিভূত হইয়া দৈত্যগণকে সকল সৈন্যের সহিত যুদ্ধসজ্জা করিতে আদেশ করিল। ১-৩

ততঃ কোপপরাধীন-চেতাঃ শুম্ভঃ প্রতাপবান্‌।
উদ্‌যোগং সর্ব্বসৈন্যানাং দৈত্যানামাদিদেশ হ।। ৩

অদ্য সর্ব্ববলৈর্দৈত্যাঃ ষড়শীতিরুদায়ুধাঃ।
K¤^~bvs চতুরশীতিনির্যান্তু ¯^e‰je©„Zvt|| ৪

অদ্যই ছিয়াশি জন উদ্যতাস্ত্র প্রধান দৈত্য চতুরঙ্গ সৈন্য সমভিব্যাহারে এবং চুরাশি জন K¤^yKzjRvZ দৈত্য ¯^xq সৈন্যে বেষ্টিত হইয়া যুদ্ধে গমন করুক। ৪

কোটিবীর্য্যাণি পঞ্চাশদসুরাণাং কুলানি বৈ।
শতং কুলানি ধৌম্রাণাং নির্গচ্ছন্তু মমাজ্ঞয়া।। ৫

কোটিবীর্য নামক অসুরগণের পঞ্চাশটি বংশ এবং ধৌম্রাসুরগণের একশতসংখ্যক বংশ আমার আজ্ঞায় যুদ্ধে নির্গত হউক। ৫

কালকা দৌর্হৃতা মৌর্য্যাঃ কালকেয়া-স্তথাসুরাঃ।
যুদ্ধায় সজ্জা নির্যান্তু আজ্ঞয়া ত্বরিতা মম।। ৬

কালক, দৌহৃর্দ, মৌর্য এবং কালকেয় অসুরগণ আমার আজ্ঞায় শীঘ্র যুদ্ধার্থে সজ্জিত হইয়া বহির্গত হউক। ৬

ইত্যাজ্ঞা-প্যাসুরপতিঃ শুম্ভো ভৈরবশাসনঃ।
নির্জ্জগাম মহাসৈন্য-সহস্রৈর্বহুভির্বৃতঃ।। ৭

এইরূপ আদেশ করিয়া উগ্র দৈত্যপতি শুম্ভ বহু সহস্র উত্তম সৈন্যে পরিবৃত হইয়া যুদ্ধার্থে গমন করিল। ৭

আয়াতং চণ্ডিকা দৃষ্ট্বা তৎসৈন্যমতিভীষণম্‌।
R¨v¯^‰bt পূরয়ামাস ধরণী-গগনান্তরম্‌।। ৮

অতি ভীষণ সেই সকল অসুরসৈন্য সমাগত দেখিয়া চণ্ডিকা ধনুষ্টঙ্কার-শব্দে পৃথিবী ও গগনের মধ্যদেশ (ভুবর্লোক) পূর্ণ করিলেন। ৮

ততঃ সিংহো মহানাদমতীব কৃতবান্‌ নৃপ।
N›Uv¯^‡bb Zvbœv`vbw¤^Kv চোপবৃংহয়ৎ।। ৯

হে নৃপ, অনন্তর সিংহ ভয়ঙ্কর গর্জন করিতে লাগিল, এবং Aw¤^Kv (চণ্ডিকা) ঘন্টাধ্বনি দ্বারা সেই সকল মহানাদ আরও বর্ধিত করিলেন। ৯

ধনুর্জ্যা-সিংহ-ঘন্টানাং শব্দাপূরিতদিঙ্মুখা।
নিনাদৈর্ভীষণৈঃ কালী জিগ্যে বিস্তারিতাননা।। ১০

বিস্তারিতমুখা কালী (চামুণ্ডা) হুকারনাদে দিঙ্‌মণ্ডল পূর্ণ করিয়া তাঁহার ভীষণ গর্জনে ঐসকল ধনুষ্টঙ্কার, সিংহনাদ ও ঘন্টাধ্বনিকে অভিভূত করিলেন। ১০
[ Aw¤^Kv=PwÊKv=PÊx| এবং কালী বা চামুণ্ডাই Aw¤^Kvjjv‡Uv™¢ev| ]

তৎ নিনাদমুপশ্রুত্য দৈত্যসৈন্যৈশ্চতুর্দ্দিশম্‌।
দেবী সিংহস্তথা কালী সরোষৈঃ পরিবারিতাঃ।। ১১

সেই মহাশব্দ শ্রবণ করিয়া ক্রুদ্ধা দৈত্য-সৈন্যসকল আদ্যাদেবী চণ্ডিকা, সিংহ এবং চণ্ডীললাটোদ্ভবা চামুণ্ডাকে চতুর্দিকে বেষ্টন করিল। ১১

এতস্মিন্নন্তরে ভূপ বিনাশায় সুরদ্বিষাম্‌।
fevqvgiwmsnvbvgwZexh©¨-ejvwš^Zvt|| ১২

হে নৃপ, ইত্যবসরে অসুরগণের বিনাশ এবং অমরগণের বিজয়ের জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু, বরাহ নৃসিংহ, শিব, ইন্দ্র ও কার্তিকেয়াদি দেবগণের মহাবীর্য ও মহাবল শক্তি সমূহ তাঁহাদের শরীর হইতে বহির্গতা হইয়া দেবাদির অনুরূপ দেবীমূর্তি ধারণপূর্বক চণ্ডিকার সমীপে গমন করিলেন। ১২-১৩
(শক্তি ও শক্তিমান্‌ অভেদ-নাগোজীভট্টী টীকা)

ব্রহ্মেশ-গুহ-বিষ্ণূনাং তথেন্দ্রস্য চ শক্তয়ঃ।
শরীরেভ্যো বিনিষ্ক্রম্য তদ্রূপৈশ্চণ্ডিকাং যযুঃ।। ১৩

যস্য দেবস্য যদ্রূপং যথা ভূষণ-বাহনম্‌।
তদ্বদেব হি তচ্ছক্তিরসুরান্‌ যোদ্ধু মাযযৌ।। ১৪

যে দেবতার যেরূপ আকার, ভূষণ ও বাহন তাঁহার শক্তিও তদ্রূপ আকার, ভূষণ ও বাহন গ্রহণপূর্বক অসুরগণের সহিত যুদ্ধ করিতে আগমন করিলেন। ১৪

হংসযুক্ত-বিমানাগ্রে সাক্ষসূত্র-কমণ্ডলুঃ।
আয়াতা ব্রহ্মণঃ শক্তির্ব্রহ্মাণী সাহভিধীয়তে।। ১৫

প্রথমে জপমালা-ও কমণ্ডলু-হস্তে হংসযুক্ত বিমানে আরূঢ়া ব্রহ্মার শক্তি আগমন করিলেন। তিনি ব্রহ্মাণী নামে অভিহিতা। ১৫

মাহেশ্বরী বৃষারূঢ়া ত্রিশূলবরধারিণী।
মহাহিবলয়া প্রাপ্তা চন্দ্ররেখা-বিভূষণা।। ১৬

অনন্তর বৃষবাহনা শ্রেষ্ঠত্রিশূলধারিণী মাহেশ্বরী আসিলেন, তাঁহার ললাটে অর্ধচন্দ্র শোভিত এবং তাঁহার হস্তে তক্ষক ও অনন্ত নামক মহা নাগদ্বয় বলয়রূপে ভূষিত। ১৬

কৌমারী শক্তিহস্তা চ ময়ূরবর-বাহনা।
যোদ্ধু মভ্যাযযৌ ˆ`Z¨vbw¤^Kv গুহরূপিণী।। ১৭

কার্তিকেয়রূপিণী দেবী কৌমারী শ্রেষ্ঠ ময়ূরে আরোহণপূর্বক শক্তিহস্তে দৈত্যগণের সহিত যুদ্ধ করিতে আসিলেন। ১৭

তথৈব বৈষ্ণবী শক্তির্গরুড়োপরি সংস্থিতা।
শঙ্খচক্রগদাশার্ঙ্গ-খড়্‌গ হস্তাভ্যুপাযযৌ।। ১৮

সেইরূপে গরুড়বাহনা বৈষ্ণবী দেবী শঙ্খ, চক্র, গদা, শার্ঙ্গ (বৈষ্ণবী ধনু) ও খড়্‌গহস্তে চণ্ডিকার সমীপে উপস্থিত হইলেন। ১৮

যজ্ঞবারাহমতুলং রূপং যা বিভ্রতো হরেঃ।
শক্তিঃ সাপ্যাযযৌ তত্র বারাহীং বিভ্রতী তনুম্‌।। ১৯

অনুপম যজ্ঞ-বরাহমূর্তিধারণকারিণী বিষ্ণুর শক্তি বারাহীমূর্তি ধারণ করিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে আসিলেন। ১৯

নারসিংহী নৃসিংহস্য বিভ্রতী সদৃশং বপুঃ।
প্রাপ্তা তত্র সটাক্ষেপ-ক্ষিপ্তনক্ষত্র-সংহতিঃ।। ২০

নারসিংহী নরসিংহের মূর্তি (বিষ্ণুর চতুর্থাবতারে বিবৃত রূপ) ধারণপূর্বক কেশরকম্পনে নক্ষত্রপুঞ্জ চালিত করিয়া তথায় আগমন করিলেন। ২০

বজ্রহস্তা তথৈবৈন্দ্রী গজরাজোপরি স্থিতা।
প্রাপ্তা সহস্রনয়না যথা শত্রুস্তথৈব সা।। ২১

সেইরূপেই সহস্রনয়না ঐন্দ্রী বজ্রহস্তে ঐরাবতে আরোহণ করিয়া ঠিক ইন্দ্রের মত দেবীমূর্তিতে সমাগতা হইলেন। ২১

ততঃ পরিবৃতস্তা-ভিরীশানো দেবশক্তিভিঃ।
হন্যন্তামসুরাঃ শীঘ্রং মম প্রীত্যাহ চণ্ডিকাম্‌।। ২২

তখন মহাদেব সেইসকল দেবশক্তি দ্বারা পরিবেষ্টিত হইয়া চণ্ডিকাকে বলিলেন-আমার প্রতি প্রীতিবশতঃ ইহাদের সহযোগে আপনি শীঘ্র অসুরগণকে বিনাশ করুন। ২২

ততো দেবীশরীরাত্তু বিনিষ্ক্রান্তাতিভীষণা।
চণ্ডিকাশক্তিরত্যুগ্রা শিবাশত-নিনাদিনী।। ২৩

অনন্তর দেবীর শরীর হইতে অতিভীষণা, অত্যুগ্রা, অসংখ্য শৃগালের ন্যায় শব্দকারিণী চণ্ডিকাশক্তি আবির্ভূতা হইলেন। ২৩

সা চাহ ধূম্রজটিলমীশানমপরাজিতা।
দূত ত্বং গচ্ছ ভগবন্‌ পার্শ্বং শুম্ভ-নিশুম্ভয়োঃ।। ২৪

এবং সেই অপরাজিতা দেবী ধূম্রবর্ণজটাধারী মহাদেবকে বলিলেন-ভগবন্‌, আপনি শুম্ভ ও নিশুম্ভের নিকটে বার্তাবহরূপে গমন করুন। ২৪

ব্রূহি শুম্ভং নিশুম্ভঞ্চ দানবাবতিগর্ব্বিতৌ।
যে চান্যে দানবাস্তত্র যুদ্ধায় সমুপস্থিতাঃ।। ২৫

অতিগর্বিত দানবদ্বয় শুম্ভ ও নিশুম্ভকে এবং অন্যান্য যে-সকল দানব তথায় যুদ্ধার্থ সমবেত হইয়াছে, তাহাদিগকে বলুন-। ২৫

ত্রৈলোক্যমিন্দ্রো লভতাং দেবাঃ সন্তু হবির্ভুজঃ।
যূয়ং প্রয়াত পাতালং যদি জীবতুমিচ্ছথ।। ২৬

পুনরায় দেবরাজ ইন্দ্র ত্রৈলোক্যের অধিপতি হউন এবং দেবগণ যজ্ঞাহুতি ভোগ করুন। যদি তোমরা বাঁচিতে ইচ্ছা কর তবে পাতালে প্রবেশ কর। ২৬

বলাবলেপাদথ চেদ্‌ ভবন্তো যুদ্ধকাঙ্ক্ষিণঃ।
তদাগচ্ছত তৃপ্যন্তু মচ্ছিবাঃ পিশিতেন বঃ।। ২৭

আর যদি বলগর্বহেতু তোমরা যুদ্ধাকাঙ্ক্ষী হও তবে আগমন কর; আমার শৃগালীগণ তোমাদের মাংস ভক্ষণপূর্বক পরিতৃপ্ত হউক। ২৭

যতো নিযুক্ত দৌত্যেন তয়া দেব্যা শিবঃ ¯^qg&|
শিবদূতীতি লোকেহস্মিংস্ততঃ সা খ্যাতিমাগতা।। ২৮

সাক্ষাৎ শিবকে দেবী দৌত্যকার্যে নিযুক্ত করিয়াছিলেন বলিয়া এই জগতে তিনি শিবদূতী নামে প্রসিদ্ধা হইয়াছেন। ২৮

তেহপি শ্রুত্বা বচো দেব্যাঃ শর্ব্বাখ্যাতং মহাসুরাঃ।
অমর্ষাপূরিতা জগ্মুর্যতঃ কাত্যায়নী স্থিতা।। ২৯

সেই মহাসুরগণও শিবকথিত শিবদূতী দেবীর বাক্যসমুদয় শ্রবণে ক্রোধে পরিপূর্ণ হইয়া যেখানে ক্যাত্যায়নী অবস্থিতা ছিলেন তথায় গমন করিলেন। ২৯

ততঃ প্রথমমেবাগ্রে শরশক্ত্যৃষ্টিবৃষ্টিভিঃ।
ববর্ষুরুদ্ধতামর্ষাস্তাং দেবীমমরারয়ঃ।। ৩০

অনন্তর ক্রোধান্মত্ত দেবশত্রু অসুরগণ প্রথমেই দেবীর অগ্রে শর, শক্তি ও ঋষ্টি (খড়্‌গ)-বর্ষণ দ্বারা তাঁহাকে আচ্ছন্ন করিল। ৩০

সা চ তান্‌ প্রতিহান্‌ বাণাঞ্ছূল-চক্র-পরশ্বধান্‌।
চিচ্ছেদ লীলয়াধ্মাত ধনুর্মু ক্তৈর্ম্মহেষুভিঃ।। ৩১

কালীও অসুর-নিক্ষিপ্ত বাণ, চক্র ও কুঠারাদি অস্ত্র অনায়াসে টঙ্কৃত ধনুর্মুক্ত বাণসমূহ দ্বারা ছেদন করিলেন। ৩১

তস্যাগ্রতস্তথা কালী শূলপাত-বিদারিতান্‌।
খট্বাঙ্গ-প্রোথিতাংশ্চারীন্‌ কুর্ব্বতী ব্যচরত্তদা।। ৩২

তখন কালী শুম্ভের সম্মুখে অসুরগণকে শূলাঘাতে বিদীর্ণ এবং খট্বাঙ্গের প্রহারে মর্দিত করিয়া বিচরণ করিতে লাগিলেন। ৩২

কমণ্ডলু-জলাক্ষেপ-হতবীর্য্যান্‌ হতৌজসঃ।
ব্রহ্মাণী চাকরোচ্চত্রূন্‌ যেন যেন স্ম ধাবতি।। ৩৩

ব্রহ্মাণী যে যে পথে ধাবিত হইলেন তত্রস্থ অসুরগণকে কমণ্ডলু (প্রণবপূত) জলসিঞ্চন দ্বারা বীর্যহীন ও ওজঃশূন্য করিলেন। ৩৩

মহেশ্বরী ত্রিশূলেন তথা চক্রেণ বৈষ্ণবী।
দৈত্যাঞ্জঘান কৌমারী তথা শক্ত্যাতিকোপনা।। ৩৪

উক্ত প্রকারে অতিক্রুদ্ধা মাহেশ্বরী ত্রিশূল দ্বারা, বৈষ্ণবী চক্র দ্বারা এবং কৌমারী শক্তি-অস্ত্র দ্বারা দৈত্যগণকে বিনাশ করিলেন। ৩৪

ঐন্দ্রীকুলিশ-পাতেন শতশো দৈত্যাদানবাঃ।
পেতুর্বিদারিতাঃ পৃথ্ব্যাং রুধিরৌঘ-প্রবর্ষিণঃ।। ৩৫

ঐন্দ্রীর বজ্রাঘাতে শত শত দৈত্য ও দানব বিদীর্ণ হইয়া রক্তস্রোত প্রবাহিত করিয়া ভূতলে পতিত হইল। ৩৫

তুণ্ডপ্রহারবিধ্বস্তা দংষ্ট্রাগ্রক্ষত-বক্ষসঃ।
বরাহমূর্ত্ত্যা ন্যপতংশ্চক্রেণ চ বিদারিতাঃ।। ৩৬

অসুরগণ বারাহী কর্তৃক মুখ-প্রহারে বিনষ্ট, দন্তাগ্রের আঘাতে বক্ষঃস্থলে আহত এবং চক্র দ্বারা বিদীর্ণ হইয়া ভূতলে মৃত্যুমুখে নিপতিত হইল। ৩৬

নখৈর্ব্বিদারিতাংশ্চান্যান্‌ ভক্ষয়ন্তী মহাসুরান্‌।
নারসিংহী চচারাজৌ bv`vc~Y©-w`M¤^iv|| ৩৭

নারসিংহী সিংহনাদে দশ দিক্‌ ও নভোমণ্ডল পরিপূর্ণ করিয়া নখসমূহের দ্বারা অন্যান্য মহাসুরকে বিদীর্ণ করিয়া ভক্ষণ করিতে করিতে যুদ্ধক্ষেত্রে বিচরণ করিলেন। ৩৭

চণ্ডাট্টহাসৈরসুরাঃ শিবদূত্যভিদূষিতাঃ।
পেতুঃ পৃথিব্যাং পতিতাংস্তাংশ্চখাদাথ সা তদা।। ৩৮

তখন শিবদূতীর উৎকট অট্টহাস্যে মূর্ছিত হইয়া অসুরগণ ধরাশায়ী হইতে লাগিল। আর তিনি পতিত অসুরগণকে ভক্ষণ করিতে লাগিলেন। ৩৮

ইতি মাতৃগণং ক্রুদ্ধং মর্দ্দয়ন্তং মহাসুরান্‌।
দৃষ্ট্বাভ্যুপায়ৈর্বিবিধৈর্নশুর্দেবারিসৈনিকাঃ।। ৩৯

এইরূপে ক্রুদ্ধা ব্রাহ্মী-আদি অষ্ট-মাতৃকাগণ বিবিধ উপায়ে মহাসুরগণকে মথিত করিতে লাগিলেন। তাহা দেখিয়া অসুরসৈন্যগণ চারিদিকে পলায়ন করিতে লাগিল। ৩৯

পলায়নপরান্‌ দৃষ্ট্বা দৈত্যান্‌ মাতৃগণার্দ্দিতান্‌।
যোদ্ধুমভ্যাযযৌ ক্রুদ্ধো রক্তবীজো মহাসুরঃ।। ৪০

ব্রাহ্মী-আদি অষ্ট-মাতৃকা কর্তৃক মর্দিত দৈত্যগণকে পলায়ন করিতে দেখিয়া মহাসুর রক্তবীজ ক্রুদ্ধ হইয়া যুদ্ধার্থ তাঁহাদের সম্মুখীন হইল। ৪০

রক্তবিন্দুর্যদা ভূমৌ পতত্যস্য শরীরতঃ।
সমুৎপততি মেদিন্যাস্তৎপ্রমাণস্তদাসুরঃ।। ৪১

রক্তবীজের শরীর হইতে যখন একবিন্দু রক্ত ভূমিতে পতিত হইল তখনই ভূপতিত রক্তবিন্দু হইতে রক্তবীজের মত দেহধারী ও বলশালী এক এক অসুর উৎপন্ন হইল। ৪১

যুযুধে স গদাপাণিরিন্দ্রশক্ত্যা মহাসুরঃ।
ততশ্চৈন্দ্রী ¯^e‡RªY রক্তবীজমতাড়য়ৎ।। ৪২

সে মহাসুর রক্তবীজ ঐন্দ্রীর সহিত গদাহস্তে যুদ্ধ করিতে লাগিল। তখন ঐন্দ্রীও ¯^xq বজ্রাঘাতে রক্তবীজকে আহত করিলেন। ৪২

কুলিশেনাহতস্যাশু তস্য সুস্রাব শোণিতম্‌।
সমুত্তস্থুস্ততো যোধাস্তদ্রূপাস্তৎপরাক্রমাঃ।। ৪৩

বজ্রাহত রক্তবীজের শরীর হইতে দ্রুতবেগে রক্তস্রাব বহিতে লাগিল। সেই রক্ত হইতে তাহার মত আকারবিশিষ্ট ও পরাক্রমসম্পন্ন অসংখ্য যোদ্ধা সমুত্থিত হইল। ৪৩

যাবন্তঃ পতিতাস্তস্য শরীরাদ্রক্তবিন্দবঃ।
তাবন্তঃ পুরুষা জাতাস্তদ্‌বীর্য্যবল-বিক্রমাঃ।। ৪৪

রক্তবীজের শরীর হইতে যত রক্তবিন্দু ভূমিতে পতিত হইল তাহার মত বলবান্‌, বীর্যশালী ও বিক্রমসম্পন্ন তত বীরপুরুষ উৎপন্ন হইল। ৪৪

তে চাপি যুযুধুস্তত্র পুরুষা রক্তসম্ভবাঃ।
সমং মাতৃভিরত্যুগ্র-শস্ত্রপাতাতিভীষণম্‌।। ৪৫

সেই রক্তসম্ভূত বীরগণও যুদ্ধক্ষেত্রে মাতৃগণের সহিত উগ্র অস্ত্রশস্ত্রাদি নিক্ষেপপূর্বক অতি ভীষণরূপে যুদ্ধ করিতে লাগিল। ৪৫

পুনশ্চ বজ্রপাতেন ক্ষতমস্য শিরো যদা।
ববাহ রক্তং পুরুষাস্ততো জাতাঃ সহস্রশঃ।। ৪৬

পুনরায় রক্তবীজের মস্তক যখন বজ্রাঘাতে ক্ষত হইল তখন রক্তধারা বহিতে লাগিল এবং সেই রক্ত হইতে সহস্র সহস্র অসুর জাত হইল। ৪৬

বৈষ্ণবী সমরে চৈনং চক্রেণাভিজঘান হ।
গদয়া তাড়য়ামাস ঐন্দ্রী তমসুরেশ্বরম্‌।। ৪৭

যুদ্ধে বৈষ্ণবী রক্তবীজকে চক্রের দ্বারা এবং ঐন্দ্রী তাহাকে গদার দ্বারা আঘাত করিলেন। ৪৭

বৈষ্ণবীচক্রভিন্নস্য রুধিরস্রাবসম্ভবৈঃ।
সহস্রশো জগদ্‌ ব্যাপ্তং তৎ-প্রমাণ্যৈর্মহাসুরৈঃ।। ৪৮

বৈষ্ণবীর চক্র দ্বারা ছিন্ন সেই অসুরদেহের রক্তস্রাব হইতে রক্তবীজতুল্য সহস্র মহাসুর উৎপন্ন হইয়া জগৎ পরিব্যাপ্ত করিল। ৪৮

শক্ত্যা জঘান কৌমারী বারাহী চ তথাসিনা।
মাহেশ্বরী ত্রিশূলেন রক্তবীজং মহাসুরম্‌।। ৪৯

কৌমারী শক্তি-অস্ত্র দ্বারা, বারাহী অসির দ্বারা এবং মাহেশ্বরী ত্রিশূল দ্বারা মহাসুর রক্তবীজকে আঘাত করিলেন। ৪৯

স চাপি গদয়া দৈত্যঃ সর্ব্বা এবাহনৎ পৃথক্‌।
মাতৃঃ কোপ-সমাবিষ্টো রক্তবীজো মহাসুরঃ।। ৫০

সেই দৈত্য মহাসুর রক্তবীজও ক্রোধোন্মত্ত হইয়া মহাশক্তি মাতৃগণকে পৃথক্‌ভাবে গদার দ্বারা আঘাত করিল। ৫০

তস্যাহতস্য বহুধা শক্তিশূলাদিভির্ভুবি।
পপাত যো বৈ রক্তৌঘস্তেনা-সঞ্ছতশোহসুরাঃ।। ৫১

দেবীগণের শক্তি ও শূলাদি অস্ত্রের আঘাতে নানাপ্রকারে আহত সেই রক্তবীজের শরীর হইতে যে রক্তপ্রবাহ ভূতলে পতিত হইল, তাহা হইতে শত শত অসুর উৎপন্ন হইল। ৫১

তৈশ্চাসুরাসৃক্‌-সম্ভূতৈরসুরৈঃ সকলং জগৎ।
ব্যাপ্তমাসীৎ ততো দেবা ভয়মাজগ্মুরুত্তমম্‌।। ৫২

রক্তবীজাসুরের রক্তজাত অসুরগণ সমগ্র পৃথিবী পরিব্যাপ্ত করিল। তাহাতে দেবগণ অত্যন্ত ভীত হইলেন। ৫২

তান্‌ বিষণ্নান্‌ সুরান্‌ দৃষ্ট্বা চণ্ডিকা প্রাহ সত্বরা।
উবাচ কালীং চামুণ্ডে! বিস্তরং বদনং কুরু।। ৫৩

সেই দেবগণকে বিষণ্ন দেখিয়া চণ্ডিকা সহাস্যে কালীকে বলিলেন-চামুণ্ডে, শীঘ্র বদন বিস্তৃত কর। ৫৩

মচ্ছস্ত্রপাত-সম্ভূতান্‌ রক্তবিন্দূন্‌ মহাসুরান্‌।
রক্তবিন্দোঃ প্রতীচ্ছ ত্বং বক্ত্রেণানেনবেগিতা।। ৫৪

এবং আমার অস্ত্রাঘাতে উৎপন্ন রক্তবিন্দুসমূহ ও রক্তবিন্দুজাত মহাসুরগণকে সত্বর ভক্ষণ কর। ৫৪

ভক্ষয়ন্তী চর রণে তদুৎপন্নান্‌-মহাসুরান্‌।
এবমেষ ক্ষয়ং দৈত্যঃ ক্ষীণরক্তো গমিষ্যতি।। ৫৫

রক্তবীজজাত মহাসুরগণকে ভক্ষণ করিতে করিতে তুমি যুদ্ধক্ষেত্রে বিচরণ কর। তাহা হইলে এই রক্তবীজ রক্তহীন হইয়া ক্ষয়প্রাপ্ত হইবে। ৫৫

ভক্ষ্যমাণাস্ত্বয়া চোগ্রা ন চোৎপৎস্যন্তি চাপরে।
ইত্যুক্ত্বা তাং ততো দেবী শূলেনাভিজঘান তম্‌।। ৫৬

তুমি এইরূপে ভক্ষণ করিলে অন্য উগ্রাসুরগণ আর উৎপন্ন হইবে না। চণ্ডিকা কালীকে এইরূপ বলিয়া শূল দ্বারা রক্তবীজকে আঘাত করিলেন। তখন কালী রক্তবীজের রক্ত ভূপতিত হইতে না দিয়াই মুখে গ্রহণ (ও পান) করিলেন। ৫৬-৫৭

মুখেন কালী জগৃহে রক্তবীজস্য শোণিতম্‌।
ততোহসাবাজঘানাথ গদয়া তত্র চণ্ডিকাম্‌।। ৫৭

ন চাস্যা বেদনাঞ্চক্রে গদাপাতোহল্পিকামপি।
তস্যাহতস্য দেহাত্তু বহু সুস্রাব শোণিতম্‌।। ৫৮

তখন রক্তবীজও গদা দ্বারা তথায় চণ্ডিকাকে আঘাত করিল। কিন্তু গদাঘাত চণ্ডিকার কিঞ্চিন্মাত্রও বেদনা উৎপাদন করিল না। (কারণ দেবী চিদানন্দরূপিণী) ৫৭-৫৮

যতস্ততস্তদ্বক্ত্রেণ চামুণ্ডা সংপ্রতীচ্ছতি।
মুখে সমুদ্‌গতা যেহস্যা রক্তপাতান্মহাসুরাঃ।। ৫৯

আহত রক্তবীজের শরীর হইতে বহু রক্ত প্রবাহিত হইল। চামুণ্ডা ¯^xq মুখে সেই সকল রক্ত পান করিলেন। ৫৮-৫৯

তাঃশ্চখাদাথ চামুণ্ডা পপৌ তস্য চ শোণিতম্‌।
দেবী শূলেন বজ্রেণ বাণৈরসিভির্ঋষ্টিভিঃ।। ৬০

অনন্তর কালীর মুখ-গহ্বরে পতিত রক্তবিন্দু হইতে যে সকল মহাসুর তথায় উৎপন্ন হইল, চামুণ্ডা (কালী) তাহাদিগকে ভক্ষণ করিলেন এবং রক্তবীজের রক্তও পান করিলেন। ৫৯-৬০

জঘান রক্তবীজং তং চামুণ্ডাপীতশোণিতম্‌।
স পপাত মহীপৃষ্ঠে শস্ত্রসঙ্ঘসমাহতঃ।। ৬১

চামুণ্ডা রক্তবীজের রক্ত পান করিলে চণ্ডিকা দেবী তাহাকে শূল, বজ্র, বাণ, অসি ও ঋষ্টি প্রভৃতির আঘাতে বধ করিলেন। ৬০-৬১

নীরক্তশ্চ মহীপাল! রক্তবীজো মহাসুরঃ।
ততস্তে হর্ষমতুলমবাপুস্ত্রিদশা নৃপা।। ৬২

হে মহীপাল, সেই মহাসুর রক্তবীজ শস্ত্রসমূহ দ্বারা আহত ও রক্তশূন্য হইয়া ভূতলে পতিত হইল। ৬১-৬২

তেষাং মাতৃগণো জাতো ননর্ত্তাসৃঙ্‌মদোদ্ধতঃ।। ৬৩

হে নৃপ, তখন সেই দেবগণ পরমানন্দ লাভ করিলেন এবং তাঁহাদের শরীর হইতে উৎপন্ন ব্রহ্মাণী প্রমুখ মাতৃগণও অসুররক্তপানে উন্মত্ত হইয়া নৃত্য করিতে লাগিলেন। ৬২-৬৩

ইতি মার্কণ্ডেয়পুরাণে সাবর্ণিকে gš^šÍ‡i দেবীমাহাত্ম্যে
রক্তবীজবধঃ।। ৮ম অঃ।।

শ্রীমার্কণ্ডেয়পুরাণের অন্তর্গত সাবর্ণি মনুর AwaKvim¤^Üxq দেবীমাহাত্ম্যানুবাদে রক্তবীজবধনামক অষ্টম অধ্যায় সমাপ্ত।



Print