
বৈদিকযুগ ও আদ্যাশক্তি
বৈদিক যুগে এই আদ্যা ব্রহ্মশক্তির কথা আবার কোন উপনিষদেও উমা-হৈমবতীরূপে আমরা জেনেছি। সেখানে তিনি জ্যোতিঃস্বরূপ সচ্চিদানন্দ ব্রহ্মকে দেবতাদের বুঝিয়েছেন। করুণাময়ী জননী মূর্তিতে ইন্দ্রাদি দেবতাদের অহংকার নাশ করে তাদের ব্রহ্মজ্ঞান তত্ত্ব উপলব্ধিতে সাহায্য করেছেন। অহংকারই জীবের অজ্ঞানের কারণ। এই অহং নাশ হলে তবেই তত্ত্বোপলব্ধি হয়। আর আদি জননীর কৃপাতেই দেবসন্তানদের সেই অহং নাশ হয়ে ব্রহ্ম সম্পর্কে ধারণা জন্মায়।
ঋকবেদের রাত্রিসূক্তের পরিশিষ্টের দ্বাদশ ঋকে একটি মন্ত্র আছে-‘তামগ্নিবর্ণাম্ তপসাজ্বলন্তীং বৈরোচনীম্ কর্মফলেষু জুষ্টাম্। দুর্গাং দেবিং শরণমহম্ প্রপদ্যে সুতরসি তরসে নমঃ। দেবীর স্বরূপ বলা হচ্ছে যিনি অগ্নিবর্ণা ও স্বকীয় তপঃশক্তিতে উজ্জ্বল, চতুর্বর্গ ফলদাত্রী, পরিত্রাণকারিণী। সংসার সাগর পার হওয়ার জন্য সেই দুর্গাদেবীর আমি শরণ নিচ্ছি।
তৈত্তিরীয় আরণ্যকে নবম অনুবাকে দুর্গা-গায়ত্রী আছে, ‘কাত্যায়নায় বিদ্মহে কন্যা কুমারিং ধীমহি তন্নোদুর্গি-প্রচোদয়াৎ। এই মন্ত্র দ্বারা স্বর্ণবর্ণা, শিরে চন্দ্রকলাশোভিতা বেদপ্রসিদ্ধা দেবী ভগবতীর কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে। যিনি কাত্যায়ন ঋষির আশ্রমে প্রকাশিতা সেই আদি কুমারী দুর্গা দেবীর কাছে জ্ঞান লাভের জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে।