
দুর্গা ও মহিষাসুর
মহিষাসুর ও ‘মহিষাসুরমর্দিনীর’ উপাখ্যান পৌরাণিক উপাখ্যান। মার্কণ্ডেয়-পুরাণ, বরাহপুরাণ, বামণপুরাণ, কালিকাপুরাণ এবং দেবীভাগবতে বলা হয়েছে, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর, বরুণ, অগ্নি, বায়ু, ইন্দ্র প্রমুখ সকল দেবতার দেহজাত তেজোরাশি সম্মিলিত হয়ে মহিষাসুর-বিনাশের নিমিত্ত মহিষাসুরমর্দিনী বা মহিষমর্দিনীর আবির্ভাব হয়েছিল। তবে এই সুবিখ্যাত উপাখ্যানের সুপ্রসিদ্ধ আকর-গ্রন্থ হল ‘চণ্ডী’ যা মার্কণ্ডেয়-পুরাণের অন্তর্গত তেরটি (৮১-৯৩) অধ্যায়। ‘দেবীমাহাত্ম্য’ এবং ‘দুর্গা সপ্তসতী’ নামেও চণ্ডী সুপরিচিত। চণ্ডীর দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনায় দেখি, মেধা ঋষি রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্যকে বলেছেনঃ
“দেবাসুরমভূদ্ যুদ্ধং পূর্ণমব্দতং পুরা।
মহিষেহসুরাণামধিপে দেবানাঞ্চ পুরন্দরে।”
-পুরাকালে যখন মহিষাসুর অসুরদের এবং পুরন্দর অর্থাৎ ইন্দ্র দেবতাদের অধীশ্বর ছিলেন, তখন দেবতা ও অসুরদের মধ্যে একশ বছর ধরে যুদ্ধ হয়েছিল।
“তত্রাসুরৈর্মহাবীর্যৈর্দেবসৈন্যং পরাজিতম্।
জিত্বা চ সকলান্ দেবানিন্দ্রোহভূন্মহিষাসুর।।”
-সেই যুদ্ধে মহাপরাক্রান্ত অসুরেরা দেবসৈন্যকে পরাজিত করে এবং সমস্ত দেবতাকে পরাজিত করে মহিষাসুর ইন্দ্রত্ব লাভ করেন অর্থাৎ স্বর্গের অধিপতি হন।